যাকাত সংগ্রহকারী উনাদের ফযীলত

১) খাছ সুন্নত আদায় এবং ফরয ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যাবে:

২) দান-ছদকা যত হাত ঘুরে আসে প্রত্যেকেই সমান ফযীলত লাভ করবে।

তাই নিজের অর্থ খরচ না করেও যাকাত দাতার সমান সকল ফযীলত পাচ্ছে।

৩) দুআ পাচ্ছে:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং তিনি দোয়া করেন পবিত্র যাকাত আদায়কারীর ও তার পরিবারের জন্য
عن حضرة عبد الله بن ابى اوفى رضى الله تعالى عنه قال كان النبى صلى الله عليه وسلم اذا اتاه قوم بصدقتهم قال اللهم صل على ال فلان فاتاه ابى بصدقته فقال اللهم صل عليه ال حضرة ابى اوفى رضى الله عنه متفق عليه وفى رواية اذا اتى الرجل النبى صلى الله عليه وسلم بصدقته قال اللهم صل عليه.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, কোন পরিবারের লোকেরা যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তাদের পবিত্র যাকাত নিয়ে আসতেন, তখন তিনি বলতেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি অমুক ব্যক্তি ও উনার পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন।
হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদা আমার পিতা উনার নিকট পবিত্র যাকাত নিয়ে আসলেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি দয়া করুন হযরত আবু আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পরিবার উনাদের প্রতি।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
অপর বর্ণনায রয়েছে, যখন কোন ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আপন পবিত্র যাকাত নিয়ে আসতেন, তখন তিনি বলেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি উনার প্রতি দয়া করুন। সুবহানাল্লাহ!

৪) সমস্ত প্রকার শরীয়ত উনার খিলাফ/জুলুমের প্রতিবাদ ও নাহক্ব জায়গায় যাকাত প্রদান থেকে বিরত রেখে হক্ব জায়গায় যাকাত প্রদানে সহযোগীতা করা।

সংকোচের কোন কারণ নেই:
عَنْ حَضَرَتْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدّهِ أَنَّ امْرَأَةً أَتَتْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهَا ابْنَةٌ لَـهَا وَفِى يَدِ ابْنَتِهَا مَسَكَتَانِ غَلِيظَتَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ لَـهَا أَتُعْطِينَ زَكوةَ هَذَا؟ قَالَتْ لَا قَالَ أَيَسُرُّكِ أَنْ يُسَوّرَكِ اللهُ بِـهِمَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ سِوَارَيْنِ مِنْ نَار. قَالَ فَخَلَعَتْهُمَا فَأَلْقَتْهُمَا إِلَى النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَتْ هُـمَا للهِ عَزَّ وَجَلَّ وَلِرَسُوْلِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ : “হযরত আমর ইবনে শু’আইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে তিনি উনার সম্মানিত দাদা থেকে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এক মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি আগমন করেন, উনার সাথে উনার একজন কন্যা ছিলেন। উনার কন্যার হাত মুবারক-এ সোনার দুটি মোটা চুরি ছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আপনি কি এর পবিত্র যাকাত প্রদান করেন? তিনি বলেন, না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আপনি কি পছন্দ করেন যে, আপনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিয়ামতের দিন এই দুটির পরিবর্তে আগুনের দুটি চুড়ি পরাবেন? তখন তিনি চুড়ি দুটি খুলে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রদান করেন এবং বলেন, এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য।” (আবূ দাঊদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
যাকাত আদায়ের জন্যে অত্যন্ত জোরালো নির্দেশ রয়েছে: নামায ও যাকাত অস্বীকারকারীর বিরুদ্ধে জিহাদ কর। “হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! যে ব্যক্তি সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে আমি তার সাথে জিহাদ করবো।” “মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! তারা যদি বলে আমাকে উটের গলার রশিও দিতে অস্বীকার করে, তাহলে আমি তাদের সাথে জিহাদ করবো।” হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আমি দেখলাম মহান আল্লাহ পাক হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার হৃদয়কে জিহাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কাজেই আমি বুঝতে পারলাম, হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার কথাই সত্য ছিলো। (বুখারী শরীফ, যাকাত অধ্যায়; মুসলিম শরীফ, ঈমান অধ্যায়)
  • শক্তভাবে বলতে হবে। যাকাত, ফিতরা ও উশর প্রদান প্রদান করা ফরয-ওয়াজিব। গ্রহণ ফরয না।
  • যদি যাকাত না নিতাম হারাম মিশ্রিত হয়ে যেত, জাহান্নামী হয়ে যেতেন । হারাম থেকে বাঁচার সুযোগ পেয়েছেন।
  • আমরা যে কষ্ট করে এসেছি হক্ব পথে যাকাত দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। নইলে না হক্ব পথে দিলে বরকত নষ্ট হবে, আযাব-গযব, বালা মুছীবত আসবে।